সত্য কথন
জীবন থেকে নেওয়া
(১) খালি কলসী বাজে বেশিঃ প্রকৃত সৎ ও আল্লাহওয়ালা বান্দা কোনদিন মানুষের কাছে নিজেকে ভালো বলে জাহির করতে চাইবেনা। কারণ তার সমস্ত কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে শুধুমাত্র আল্লাহকে রাজী-খুশি করা। পক্ষান্তরে ভেজালযুক্ত লোকেরা সবসময় আতংক বা অস্বস্তির মাঝে থাকে, না জানি তার দুর্নীতি বা খারাপ কাজ কখন মানুষের কাছে ধরা পড়ে যায়। এমন লোকেরাই মানুষের মাঝে সুনাম কুড়ানোর জন্য সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত করে নিজের ঢোল নিজেই পিটিয়ে বেড়ায়।
(২) অযোগ্য লোকেরা সব সময় নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়, কারণ তারা কোন সমস্যার সমাধান করতে পারেনা।
(৩) মানুষের জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, ব্যবসা বাণিজ্য বা চাকুরী, সুস্বাস্থ্য, অসুস্থতা, ভালো সময় খারাপ সময়. . .ভাগ্যের এমন ছোট বড় প্রতিটা বিষয় নিয়ন্ত্রন করেন মহান আল্লাহ। সুতরাং, কাকতালীয়ভাবে কিছু হয়না, অকাল মৃত্যু বলে কোন কথা নেই। আল্লাহ যা পূর্ব থেকে নির্ধারণ করে রেখেছেন, তা-ই হয়ে থাকে। এই দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে বান্দা কোন কিছু পেয়ে অতি উল্লসিত হবেনা, বরঙ আল্লাহর কাছে শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা আদায়) করবে। কিংবা কিছু হারালে হতাশ হবেনা, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অপ্রীতিকর অবস্থাতে ধৈর্য্য ধারণ করবে।
(৪) একজন মূর্খ যতক্ষণ পর্যন্ত তার মুখ বন্ধ রাখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার মূর্খতা প্রকাশ পাবেনা। একজন জ্ঞানী ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত কথা না বলবে, তার জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যাবেনা।
(৫) আদ, সামূদ, ফিরাউন, আসহাবে কাহাফ, আসহাবে উখদূদের মতো অতীত যুগের অত্যাচারী জাতির কাহিনীগুলো আল্লাহ তাআ'লা ক্বুরআনুল কারীমের বিভিন্ন স্থানে বর্ণনা করেছেন, যাতে করে আমরা তাদের ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নেই। প্রবল শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী হয়ে মিশরের বাদশাহ ফিরাউন বনী ইসরাঈলের লোকদেরকে দাস বানিয়ে তাদের উপর নির্মম অত্যাচার করতো। ফিরাউন বনী ইসরাইলীদেরকে দমিয়ে রাখার জন্য তাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করতো এবং কন্যা সন্তানদেরকে দাসী বানিয়ে রাখতো। এমনকি ক্ষমতার গর্বে মত্ত হয়ে ফিরাউন "আনা রাব্বুকুমুল আ'লা" (আমি তোমাদের মহান রব্ব) বলে নিজেকে ইলাহ হিসেবে দাবী করেছিলো। এতো ক্ষমতার অধিকারী হয়ে সে অহংকার করে এবং আল্লাহর অবাধ্য হয়। প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ ফিরাউনসহ তার শক্তিশালী সৈন্যবাহিনীকে মিশরের নীল নদে অত্যন্ত কৌশলে ডুবিয়ে ধ্বংস করে দেন।
এই ঘটনা থেকে শিক্ষা হচ্ছেঃ
(ক) আল্লাহ কখনো একদল লোক দ্বারা অন্য দলের লোকদেরকে পরীক্ষা করেন। ক্ষমতাসীন লোকদের পক্ষ থেকে অন্যায়, অত্যাচার কখনো জাতির লোকদের পাপের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি, কখনো আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য ঈমানের পরীক্ষা।
(খ) ক্ষমতা পেলে মানুষ অহংকারী হয়, আর অহংকার মানুষকে আল্লাহর অবাধ্যতা দিকে নিয়ে যায়। আসমানে প্রথম পাপ ইবলীস করেছিলো তার অহংকারের কারণেই।
(গ) অন্যায় অত্যাচার করে দুনিয়াতে কেউই চিরদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনা। বান্দার পাপ বাড়তে বাড়তে যখম সীমা লংঘন করে, আল্লাহ তখন তাকে কঠোর শাস্তি দেন।
(ঘ) জালিমদেরকে আল্লাহ কখনো সফলকাম হতে দেন না।
(ঙ) ২০০১-০৬ পর্যন্ত জামাতে ইসলামীর "বন্ধু" বিএনপি ক্ষমতায় থেকে দেশে অন্যায়, নৈরাজ্য ও বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিলো। খুব অল্প দিনের মাঝেই আল্লাহ অন্য একদল লোক দিয়ে তাদেরকে লাঞ্চিত করেছিলেন। অনুরূপভাবে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার যত অনাচার ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, মনে করবেন না চিরদিন তারা এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে। যুগে যুগে আল্লাহ জালিমদেরকে যেইভাবে ধ্বংস করেছেন ইন শা আল্লাহ একদিন তাদেরকেও সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে। কেননা মাজলুম ব্যাক্তির বদ দুয়া আর আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা বা ব্যবধান থাকেনা।
আল্লাহ আমাদেরকে, সমস্ত মুমিন নারী ও পুরুষদেরকে নিরাপদে ও শান্তিতে রাখুন, আমিন।
কোন মন্তব্য নেই