মুয়াবিয়া রাঃ এর মর্যাদা
মুআবিয়া (রাযি:) এর মান-মর্যাদা:
প্রথমত: নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট তার মর্যাদা:
ইসলাম গ্রহণের পর নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট তার ছিল বিশেষ মান-মর্যাদা। স্বহীহ মুসলিমে প্রমাণিত, নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যান্য #অহী #লেখকদের মাঝে তাকেও অহী লেখক হিসাবে নির্ধারণ করেন এবং তাকে এই মহান দায়িত্ব দ্বারা সম্মানিত করেন। তিনি এই মহৎ মর্যাদার আসনে নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু পর্যন্ত নিয়জিত থাকেন। [স্বহীহ মুসলিম ৪/১৯৪৫ নং ২৫০১]
ইবনু আব্বাস (রাযি:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: মুসলিমগণ আবু সুফইয়ানকে সম্মানের চোখে দেখতেন না আর না তার সাথে উঠা-বসা করতেন। তখন সে নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল: আল্লাহর নবী আমার তিনটি অনুরোধ শোনার আবেদন জানাই। নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্মতি দিয়ে বললেন: হ্যাঁ। সে বলল: আমার নিকট আরব জগতের সবচেয়ে সুন্দরী কন্যা রয়েছে, সে আমার মেয়ে উম্মু হাবীবা। আমি তার সাথে আপনাকে বিবাহ দিতে চাই। নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হ্যাঁ। সে বলল: এবং মুআবিয়াকে আপনার অহী লেখক হিসাবে নিযুক্ত করার আবেদন জানাই। নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন হ্যাঁ। সে বলল: আমাকে আমীর (গভর্নর) নিযুক্ত করুন যেন আমি কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযান চালাতে পারি যেমন আমি মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতাম। নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হ্যাঁ”।]
জুবাইর বিন নুফাইর হতে বর্ণিত, একদা নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাস্তা চলছিলেন এবং তার সাথে একদল লোক ছিল। ইতিমধ্যে সিরিয়ার কথা আসে। এক ব্যক্তি বলল: সিরিয়ার সাথে যেহেতু রোম সম্রাজ্য রয়েছে তাই তাদের সাথে কিভাবে পেরে উঠা সম্ভব? বর্ণনাকারী বলেন: মুআবিয়া সেই লোকদের মাঝে ছিল এবং সেই লোকের হাতে একটি লাঠি ছিল। তখন সে সেই লাঠি দ্বারা মুআবিয়ার স্কন্ধে প্রহার করল এবং বলল: আল্লাহ এর মাধ্যমে তোমাদের যথেষ্ট করে দিবেন। যাহাবী বলেন: এটি শক্তিশালী মুরসাল বর্ণনা”। [আস সিয়ার ৩/১২৭]
এই বর্ণনাটি যদিও মুআবিয়ার গভর্নর বা খেলাফতের ইঙ্গীত বহন করে কিন্তু অন্যস্থানে এর চেয়েও স্পষ্ট বর্ণনা এসেছে। আহমাদ তাঁর মুসনাদে স্বীয় সূত্রে বর্ণনা করেছেন: মুআবিয়া একদা একটি পানির পাত্র নিয়ে নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছু পিছু যাচ্ছিল। নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার দিকে মাথা তুলে বললেন: “হে মুআবিয়া যদি কোনো সময় তুমি আমীর হও, তাহলে আল্লাহকে ভয় করিও এবং ন্যায় করিও”। মুআবিয়া বললেন: তখন থেকে আমার ধারনা হয় যে, আমি দায়িত্বের মাধ্যমে পরীক্ষায় পড়বো অত:পর আমি পরীক্ষিত হয়েছি। [মুসনাদ ৪/১০১, বর্ণনাকারীগণ সৎ]
যাহাবী বলেন: “এই বর্ণনাটির সহায়ক আরো অনেক কাছাকাছি অর্থের বর্ণনা রয়েছে”। অত:পর তিনি মুআবিয়া হতে আরো একটি হাদীসের বর্ণনা দেন। মুআবিয়া বলেন: আল্লাহর কসম! আমাকে খেলাফতের অধিকারী হতে নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই কথাই উদ্বুদ্ধ করেছে। (যদি বাদশাহ নিযুক্ত হও তো উত্তম করিও)
যাহাবী বলেন: ইবনু মুহাজির দূর্বল আর বর্ণনাটি মুরসাল। [আস সিয়ার ৩/১৩১]
ইমাম তিরমিযী সেই হাদীসকে হাসান বলেছেন যাতে নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুআবিয়া সম্বন্ধে বলেছেন: (হে আল্লাহ! তাকে তুমি হিদায়েতকারী হিদায়েতপ্রাপ্ত বানিয়ে দাও এবং তার দ্বারায় অন্যকে হিদায়েত দান করো)। [আস সিয়ার ৩/১২৫, হাদীসটিকে আহমাদ মুসনাদে বর্ণনা করেছেন ৪/২১৬ এবং শাইখ আলবানী স্বহীহ হাদীস সিরিজে স্বহীহ বলেছেন ৪/৬১৫]
-আব্দুর রাকীব বুখারী
কোন মন্তব্য নেই