Header Ads

Header ADS

আপনি যা ফয়সালা করবেন তার ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন সংকোচ খুঁজে পাবে না এবং পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করবে

ফাদ্বিলাতুশ শায়খ মুহাম্মদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ তার "রিয়াদ্বুস সালিহিন" এর ব্যাখ্যাগ্রন্থের ২য় খণ্ডের ২৬০-২৬৩ পৃষ্ঠায় সুরাতুন নিসা এর ৬৫ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন:
.
ﻓَﻼ ﻭَﺭَﺑِّﻚَ ﻻ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺤَﻜِّﻤُﻮﻙَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺷَﺠَﺮَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﺛُﻢَّ ﻻ ﻳَﺠِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﺣَﺮَﺟﺎً ﻣِﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻴْﺖَ ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻮﺍ ﺗَﺴْﻠِﻴﻤﺎً
.
"সুতরাং আপনার প্রতিপালকের শপথ! নিশ্চয়ই তারা ঈমান আনে নি, যতক্ষণ তারা তাদের মতভেদের বিষয়ে আপনাকে বিচারক নির্ধারণ না করছে। অতঃপর আপনি যা ফয়সালা করবেন, তার ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন সংকোচ খুঁজে পাবে না এবং এবং পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করবে।" [আন-নিসা: ৬৫]
.
শায়খ ইবন উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ বলেন:
.
ﻓﺎﻟﺸﻲﺀ ﺍﻷﻭﻝ : ‏( ﻻ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺤَﻜِّﻤُﻮﻙَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺷَﺠَﺮَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ) .
ﻭﺍﻟﺸﻲﺀ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ‏( ﺛُﻢَّ ﻻ ﻳَﺠِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﺣَﺮَﺟﺎً ﻣِﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻴْﺖَ ‏) ، ﻳﻌﻨﻲ ﺃﻥ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻗﺪ ﻳﺤﻜﻢ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ، ﻭﻟﻜﻦ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﺣﺮﺝ، ﻳﻌﻨﻲ ﻣﺎ ﻳﻄﻤﺌﻦ ﺃﻭ ﻣﺎ ﻳﺮﺿﻰ ﺇﻻ ﺭﻏﻤﺎً ﻋﻨﻪ، ﻓﻼﺑﺪ ﻣﻦ ﺃﻥ ﻻ ﻳﺠﺪ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻓﻲ ﻧﻔﺴﻪ ﺣﺮﺟﺎً ﻣﻤﺎ ﻗﻀﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ .
ﺍﻟﺸﻲﺀ ﺍﻟﺜﺎﻟﺚ : ‏( ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻮﺍ ﺗَﺴْﻠِﻴﻤﺎً ‏) ﺃﻱ ﻳﻨﻘﺎﺩﻭﺍ ﺍﻧﻘﻴﺎﺩﺍً ﺗﺎﻣﺎً، ﻟﻴﺲ ﻓﻴﻪ ﺗﺄﺧﺮ ﻭﻻ ﺗﻘﻬﻘﺮ
.
প্রথম বিষয় হচ্ছে: "ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান আনে নি, যতক্ষণ আপনাকে তাদের মতভেদের বিষয়ে বিচারক নির্ধারণ না করছে।"
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে: "অতঃপর আপনি যা ফয়সালা করবেন, তার ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন সংকোচ খুঁজে পাবে না।" অর্থাৎ কখনো মানুষ কিতাব ও সুন্নাহকে বিচারক হিসেবে নিযুক্ত করে, কিন্তু তার অন্তরে সংকোচ থেকে যায়। অর্থাৎ সে প্রশান্তি লাভ করে না কিংবা এর প্রতি অনাগ্রহের কারণে সন্তুষ্ট হয় না। সুতরাং, মানুষ তার মনে যেন সংকোচ খুঁজে না পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
তৃতীয় বিষয় হচ্ছে: "এবং পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করবে।" অর্থাৎ পরিপূর্ণভাবে আনুগত্য করে, যেই আনুগত্যে কোন বিলম্ব এবং পিছুটান থাকে না।
.
ﻓﻬﺬﻩ ﺷﺮﻭﻁ ﺛﻼﺛﺔ ﻻ ﻳﺘﻢ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺇﻻ ﺑﻬﺎ .
ﺃﻭﻻً : ﺗﺤﻜﻴﻢ ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ .
ﻭﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻥ ﻻ ﻳﺠﺪ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻓﻲ ﻧﻔﺴﻪ ﺣﺮﺟﺎً ﻣﻤﺎ ﻗﻀﺎﻩ ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ .
ﻭﺍﻟﺜﺎﻟﺚ : ﺃﻥ ﻳﺴﻠﻢ ﺗﺴﻠﻴﻤﺎً ﺗﺎﻣﺎً ﺑﺎﻟﻐﺎً .
.
সুতরাং, এই তিনটি হচ্ছে এমন শর্ত যা ব্যতিরেকে ঈমান সম্পূর্ণ হয় না।
প্রথমতঃ রাসুল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিচারক হিসেবে নির্ধারণ করা।
দ্বিতীয়তঃ রাসুল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা ফয়সালা করেছেন, মানুষ তার মনে সেই ব্যাপারে কোন সংকোচ খুঁজে পাবে না।
তৃতীয়তঃ পূর্ণরূপে এবং চূড়ান্তভাবে এর প্রতি আত্মসমর্পণ করবে।
.
ﻭﺑﻨﺎﺀً ﻋﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻧﻘﻮﻝ : ﺇﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺤﻜﻤﻮﻥ ﺍﻟﻘﻮﺍﻧﻴﻦ ﺍﻵﻥ، ﻭﻳﺘﺮﻛﻮﻥ ﻭﺭﺍﺀﻫﻢ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻨﺔ ﺭﺳﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﺎ ﻫﻢ ﺑﻤﺆﻣﻨﻴﻦ؛ ﻟﻴﺴﻮﺍ ﺑﻤﺆﻣﻨﻴﻦ، ﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ‏( ﻓَﻼ ﻭَﺭَﺑِّﻚَ ﻻ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺤَﻜِّﻤُﻮﻙَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺷَﺠَﺮَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ‏) ﻭﻟﻘﻮﻟﻪ : ‏( ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢْ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓَﺄُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮُﻭﻥَ ‏) ‏( ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : 44 ‏) ، ﻭﻫﺆﻻﺀ ﺍﻟﻤﺤﻜﻤﻮﻥ ﻟﻠﻘﻮﺍﻧﻴﻦ ﻻ ﻳﺤﻜﻤﻮﻧﻬﺎ ﻓﻲ ﻗﻀﻴﺔ ﻣﻌﻴﻨﺔ ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ، ﻟﻬﻮﻯ ﺃﻭ ﻟﻈﻠﻢ، ﻭﻟﻜﻨﻬﻢ ﺍﺳﺘﺒﺪﻟﻮﺍ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻟﻘﺎﻧﻮﻥ، ﻭﺟﻌﻠﻮﺍ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﺎﻧﻮﻥ ﻳﺤﻞ ﻣﺤﻞ ﺷﺮﻳﻌﺔ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﻫﺬﺍ ﻛﻔﺮ؛ ﺣﺘﻰ ﻟﻮ ﺻﻠﻮﺍ ﻭﺻﺎﻣﻮﺍ ﻭﺗﺼﺪﻗﻮﺍ ﻭﺣﺠﻮﺍ، ﻓﻬﻢ ﻛﻔﺎﺭ ﻣﺎ ﺩﺍﻣﻮﺍ ﻋﺪﻟﻮﺍ ﻋﻦ ﺣﻜﻢ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﻭﻫﻢ ﻳﻌﻠﻤﻮﻥ ﺑﺤﻜﻢ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻘﻮﺍﻧﻴﻦ ﺍﻟﻤﺨﺎﻟﻔﺔ ﻟﺤﻜﻢ ﺍﻟﻠﻪ .
.
আর, এর উপর ভিত্তি করে আমরা বলি: বর্তমানে যারা সংবিধানকে বিচারক হিসেবে নির্ধারণ করে এবং আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহকে নিজেদের পেছনে পরিত্যাগ করে, নিশ্চয়ই তারা মুমিন নয়। তারা মুমিন নয়। কেননা আল্লাহ বলেছেন: "সুতরাং আপনার প্রতিপালকের শপথ! নিশ্চয়ই তারা ঈমান আনে নি, যতক্ষণ তারা তাদের মতভেদের বিষয়ে আপনাকে বিচারক নির্ধারণ না করছে।" এবং আল্লাহর বাণী: "যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সেই অনুযায়ী বিচার করে না, তারা কাফির।" [আল মাইদাহ: ৪৪] আর, সংবিধানকে বিচারক হিসেবে নির্ধারনকারী এই লোকগুলো প্রবৃত্তির বশে কিংবা অন্যায়ভাবে একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কিতাব ও সুন্নাহর বিরোধিতা করে (সংবিধানকে) বিচারক নির্ধারন করে নি। বরং, তারা দ্বীনকে এই সংবিধান দ্বারা প্রতিস্থাপন করেছে এবং তারা এই সংবিধানকে আল্লাহর শরীয়তের স্থানে স্থান দিয়েছে। আর, এটা হচ্ছে কুফর। এমনকি যদি তারা নামায পড়ে, রোযা রাখে, সদকা করে, হজ করে। যতক্ষণ তারা আল্লাহর হুকুম থেকে সরে গিয়ে আল্লাহর হুকুম জানা থাকা স্বত্ত্বেও আল্লাহর হুকুমের বিরোধিতাকারী এই সংবিধানের উপর বিদ্যমান থাকবে, ততক্ষণ তারা কুফফার।
.
( ﻓَﻼ ﻭَﺭَﺑِّﻚَ ﻻ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺤَﻜِّﻤُﻮﻙَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺷَﺠَﺮَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﺛُﻢَّ ﻻ ﻳَﺠِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﺣَﺮَﺟﺎً ﻣِﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻴْﺖَ ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻮﺍ ﺗَﺴْﻠِﻴﻤﺎً ‏) ‏( ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : 65 ) ،
.
"সুতরাং আপনার প্রতিপালকের শপথ! নিশ্চয়ই তারা ঈমান আনে নি, যতক্ষণ তারা তাদের মতভেদের বিষয়ে আপনাকে বিচারক নির্ধারণ না করছে। অতঃপর আপনি যা ফয়সালা করবেন, তার ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন সংকোচ খুঁজে পাবে না এবং এবং পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করবে।" [আন-নিসা: ৬৫]
.
ﻓﻼ ﺗﺴﺘﻐﺮﺏ ﺇﺫﺍ ﻗﻠﻨﺎ : ﺇﻥ ﻣﻦ ﺍﺳﺘﺒﺪﻝ ﺷﺮﻳﻌﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻐﻴﺮﻫﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﻘﻮﺍﻧﻴﻦ ﻓﺈﻧﻪ ﻳﻜﻔﺮ ﻭﻟﻮ ﺻﺎﻡ ﻭﺻﻠﻰ؛ ﻷﻥ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﺑﺒﻌﺾ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻛﻔﺮ ﺑﺎﻟﻜﺘﺎﺏ ﻛﻠﻪ، ﻓﺎﻟﺸﺮﻉ ﻻ ﻳﺘﺒﻌﺾ، ﺇﻣﺎ ﺗﺆﻣﻦ ﺑﻪ ﺟﻤﻴﻌﺎً، ﻭﺇﻣﺎ ﺃﻥ ﺗﻜﻔﺮ ﺑﻪ ﺟﻤﻴﻌﺎً، ﻭﺇﺫﺍ ﺁﻣﻨﺖ ﺑﺒﻌﺾ ﻭﻛﻔﺮﺕ ﺑﺒﻌﺾ، ﻓﺄﻧﺖ ﻛﺎﻓﺮ ﺑﺎﻟﺠﻤﻴﻊ، ﻷﻥ ﺣﺎﻟﻚ ﺗﻘﻮﻝ : ﺇﻧﻚ ﻻ ﺗﺆﻣﻦ ﺇﻻ ﺑﻤﺎ ﻻ ﻳﺨﺎﻟﻒ ﻫﻮﺍﻙ . ﻭﺃﻣﺎ ﻣﺎ ﺧﺎﻟﻒ ﻫﻮﺍﻙ ﻓﻼ ﺗﺆﻣﻦ ﺑﻪ . ﻫﺬﺍ ﻫﻮ ﺍﻟﻜﻔﺮ . ﻓﺄﻧﺖ ﺑﺬﻟﻚ ﺍﺗﺒﻌﺖ ﺍﻟﻬﻮﻯ، ﻭﺍﺗﺨﺬﺕ ﻫﻮﺍﻙ ﺇﻟﻬﺎً ﻣﻦ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ .
সুতরাং, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যখন আমরা বলি যে, যারা আল্লাহর শরীয়তকে এর ভিন্ন কোন সংবিধান দ্বারা পাল্টে দিবে, তারা কুফরি করে যদিও রোযা রাখে, যদিও নামায পড়ে। কেননা কিতাবের কোন অংশের প্রতি কুফরি করা হচ্ছে পুরো কিতাবকে কুফরি করা। কেননা শরীয়তকে খণ্ডে ভাগ করা যায় না, হয়ত এর পুরোটার উপর ঈমান আনা হবে নয়ত পুরোটাকে কুফরি করা হবে। যদি তুমি কিছু অংশের উপর ঈমান আনো এবং কিছু অংশ কুফরি করো, তবে তুমি পুরোটার প্রতি কাফির। কেননা তোমার অবস্থা হচ্ছে যে, তুমি কেবল তার প্রতিই ঈমান আনো যা তোমার প্রবৃত্তির বিপরীতে হয় না। আর, যা তোমার প্রবৃত্তির বিপরীতে হয় তুমি তার উপর ঈমান আনো না। এটাই হচ্ছে কুফর। কেননা তুমি প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছ এবং নিজের প্রবৃত্তিকে আল্লাহ বাদে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছো।
.
ﻓﺎﻟﺤﺎﺻﻞ ﺃﻥ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﺧﻄﻴﺮﺓ ﺟﺪﺍً، ﻣﻦ ﺃﺧﻄﺮ ﻣﺎ ﻳﻜﻮﻥ ﺑﺎﻟﻨﺴﺒﺔ ﻟﺤﻜﺎﻡ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ﺍﻟﻴﻮﻡ، ﻓﺈﻧﻬﻢ ﻗﺪ ﻭﺿﻌﻮﺍ ﻗﻮﺍﻧﻴﻦ ﺗﺨﺎﻟﻒ ﺍﻟﺸﺮﻳﻌﺔ ﻭﻫﻢ ﻳﻌﺮﻓﻮﻥ ﺍﻟﺸﺮﻳﻌﺔ، ﻭﻟﻜﻦ ﻭﺿﻌﻮﻫﺎ ـ ﻭﺍﻟﻌﻴﺎﺫ ﺑﺎﻟﻠﻪ ـ ﺗﺒﻌﺎً ﻷﻋﺪﺍﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻜﻔﺮﺓ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺳﻨﻮﺍ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻘﻮﺍﻧﻴﻦ ﻭﻣﺸﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻠﻴﻬﺎ، ﻭﺍﻟﻌﺠﺐ ﺃﻧﻪ ﻟﻘﺼﻮﺭ ﻋﻠﻢ ﻫﺆﻻﺀ ﻭﺿﻌﻒ ﺩﻳﻨﻬﻢ، ﺃﻧﻬﻢ ﻳﻌﻠﻤﻮﻥ ﺃﻥ ﻭﺍﺿﻊ ﺍﻟﻘﺎﻧﻮﻥ ﻫﻮ ﻓﻼﻥ ﺑﻦ ﻓﻼﻥ ﻣﻦ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ، ﻓﻲ ﻋﺼﺮ ﻗﺪ ﺍﺧﺘﻠﻔﺖ ﺍﻟﻌﺼﻮﺭ ﻋﻨﻪ ﻣﻦ ﻣﺌﺎﺕ ﺍﻟﺴﻨﻴﻦ، ﺛﻢ ﻫﻮ ﻓﻲ ﻣﻜﺎﻥ ﻳﺨﺘﻠﻒ ﻋﻦ ﻣﻜﺎﻥ ﺍﻷﻣﺔ ﺍﻹﺳﻼﻣﻴﺔ، ﺛﻢ ﻫﻮ ﻓﻲ ﺷﻌﺐ ﻳﺨﺘﻠﻒ ﻋﻦ ﺷﻌﻮﺏ ﺍﻷﻣﺔ ﺍﻹﺳﻼﻣﻴﺔ، ﻭﻣﻊ ﺫﻟﻚ ﻳﻔﺮﺿﻮﻥ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻘﻮﺍﻧﻴﻦ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﻣﺔ ﺍﻹﺳﻼﻣﻴﺔ، ﻭﻻ ﻳﺮﺟﻌﻮﻥ ﺇﻟﻰ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻻ ﺇﻟﻰ ﺳﻨﺔ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﻓﺄﻳﻦ ﺍﻹﺳﻼﻡ؟ ﻭﺃﻳﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ؟ ﻭﺃﻳﻦ ﺍﻟﺘﺼﺪﻳﻖ ﺑﺮﺳﺎﻟﺔ ﻣﺤﻤﺪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺃﻧﻪ ﺭﺳﻮﻝ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻛﺎﻓﺔ؟ ﻭﺃﻳﻦ ﺍﻟﺘﺼﺪﻳﻖ ﺑﻌﻤﻮﻡ ﺭﺳﺎﻟﺘﻪ ﻭﺃﻧﻬﺎ ﻋﺎﻣﺔ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺷﻲﺀ؟ .
.
সুতরাং, জানা গেল যে, এই বিষয়টি অত্যন্ত মারাত্মক। বর্তমানের মুসলিমদের শাসকদের সম্পর্কে সবচেয়ে মারাত্মক যা হতে পারে, তা হচ্ছে এটি। কেননা তারা এমন বিধান রচনা করেছে যা শরীয়তের বিরোধিতা করে এবং তারা শরীয়ত সম্পর্কে অবগত আছে। কিন্তু, এতদস্বত্ত্বেও তারা এসব রচনা করেছে। আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। তারা এটা করেছে আল্লাহর শত্রু কাফিরদের অনুসরণে যারা এই সংবিধান চালু করেছে এবং মানুষকে এর উপর চালিয়েছে। আর, আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যে, এটি (সম্ভব) হয়েছে তাদের (মানুষের) ইলমের সংকীর্ণতা এবং দ্বীনের ব্যাপারে দূর্বলতার কারণে। তারা এটা জানে যে, এই বিধান রচনাকারী হচ্ছে কাফিরদের মধ্য থেকে অমুকের ছেলে অমুক। আর, বিধান রচিত হয়েছে তাদের যুগ থেকে কয়েক শত বছর ব্যবধান বিশিষ্ট যুগে, এবং ইসলামি উম্মাহর জাতিসমূহ থেকে ভিন্ন জাতির মাঝে। কিন্তু, এতদস্বত্ত্বেও তারা এই সংবিধানকে ইসলামি উম্মাহর উপর বাধ্যতামূলক করে এবং আল্লাহর কিতাব কিংবা রাসুল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের দিকে ফিরে আসে না। সুতরাং, ইসলাম কোথায় গেল? ঈমান কোথায় গেল? মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের রিসালাতের প্রতি সত্যায়ন কোথায় গেল যে তিনি সমস্ত মানুষের জন্য রাসুল? কোথায় গেল তার রিসালাতের প্রতি সার্বিকভাবে সত্যায়ন যে, সকল বিষয়ে তার রিসালাত অন্তর্ভূক্ত?
.
ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﻬﻠﺔ ﻳﻈﻨﻮﻥ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﺮﻳﻌﺔ ﺧﺎﺻﺔ ﺑﺎﻟﻌﺒﺎﺩﺓ ﺍﻟﺘﻲ ﺑﻴﻨﻚ ﻭﺑﻴﻦ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ـ ﻓﻘﻂ، ﺃﻭ ﻓﻲ ﺍﻷﺣﻮﺍﻝ ﺍﻟﺸﺨﺼﻴﺔ ﻣﻦ ﻧﻜﺎﺡ ﻭﻣﻴﺮﺍﺙ ﻭﺷﺒﻬﻪ، ﻭﻟﻜﻨﻬﻢ ﺃﺧﻄﺌﻮﺍ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻈﻦ، ﻓﺎﻟﺸﺮﻳﻌﺔ ﻋﺎﻣﺔ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺷﻲﺀ، ﻭﺇﺫﺍ ﺷﺌﺖ ﺃﻥ ﻳﺘﺒﻴﻦ ﻟﻚ ﻫﺬﺍ؛ ﻓﺴﺎﻝ ﻣﺎ ﻫﻲ ﺃﻃﻮﻝ ﺁﻳﺔ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ؟ ﺳﻴﻘﺎﻝ ﻟﻚ ﺇﻥ ﺃﻃﻮﻝ ﺁﻳﺔ ﻫﻲ : ﺁﻳﻪ ﺍﻟﺪﻳﻦ : ‏( ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺇِﺫَﺍ ﺗَﺪَﺍﻳَﻨْﺘُﻢْ ﺑِﺪَﻳْﻦٍ .... ‏) ‏( ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : 282 ‏) ﻛﻠﻬﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺎﻣﻼﺕ، ﻓﻜﻴﻒ ﻧﻘﻮﻝ ﺇﻥ ﺍﻟﺸﺮﻉ ﺍﻹﺳﻼﻣﻲ ﺧﺎﺹ ﺑﺎﻟﻌﺒﺎﺩﺓ ﺃﻭ ﺑﺎﻷﺣﻮﺍﻝ ﺍﻟﺸﺨﺼﻴﺔ . ﻫﺬﺍ ﺟﻬﻞ ﻭﺿﻼﻝ، ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻋﻦ ﻋﻤﺪ ﻓﻬﻮ ﺿﻼﻝ ﻭﺍﺳﺘﻜﺒﺎﺭ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻋﻦ ﺟﻬﻞ ﻓﻬﻮ ﻗﺼﻮﺭ، ﻭﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﺃﻥ ﻳﺘﻌﻠﻢ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻭﻳﻌﺮﻑ، ﻧﺴﺄﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻨﺎ ﻭﻟﻬﻢ ﺍﻟﻬﺪﺍﻳﺔ .
.
বহু মূর্খ লোক ধারণা করে যে, শরীয়ত কেবল ইবাদতের সাথেই নির্দিষ্ট যা কেবলমাত্র তোমার এবং আল্লাহ 'আযযা ওয়াজাল্ল এর মধ্যে সীমিত কিংবা ব্যক্তিগত বিষয়ে সীমিত যেমন বিবাহ, উত্তরাধিকার ইত্যাদি। কিন্তু, এই ধারণা করে তারা ভুল করেছে। কেননা শরীয়ত হচ্ছে সকল বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত। যদি তুমি এই ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পেতে চাও, জিজ্ঞেস করো আল্লাহর কিতাবের সবচেয়ে দীর্ঘ আয়াত কোনটি? তোমাকে বলা হবে, সবচেয়ে দীর্ঘ আয়াত হচ্ছে ঋনপ্রদানের আয়াত। "ওহে যারা ঈমান এনেছো, যখন তোমরা একে অন্যকে ঋন দাও ..." [আল-বাক্বারাহ ২৮২] এর পুরোটাই পারস্পারিক আচরণ সংক্রান্ত। সুতরাং, কীভাবে আমরা বলব যে, ইসলামি শরীয়ত কেবল ইবাদত কিংবা ব্যক্তিগত অবস্থাদির সাথে নির্দিষ্ট? এটি হচ্ছে মূর্খতা ও ভ্রষ্টতা। যদি এটি ইচ্ছাকৃত হয়ে থাকে, তবে এটি হচ্ছে গোমরাহি ও অহংকার। যদি অজ্ঞতার কারণে হয়ে থাকে তবে এটি কমতি। এক্ষেত্রে ওয়াজিব হচ্ছে, ব্যক্তি ইলম অর্জন করবে এবং জ্ঞান লাভ করবে। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের ও তাদের জন্য হিদায়াহ চাই।
.
ﺍﻟﻤﻬﻢ ﺃﻥ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻻ ﻳﻤﻜﻦ ﺃﻥ ﻳﺆﻣﻦ ﺇﻻ ﺑﺜﻼﺛﺔ ﺷﺮﻭﻁ :
ﺍﻷﻭﻝ : ﺗﺤﻜﻴﻢ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ .
ﻭﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻻ ﻳﺠﺪ ﻓﻲ ﺻﺪﺭﻩ ﺣﺮﺟﺎً ﻭﻻ ﻳﻄﻴﻖ ﺻﺪﺭﻩ ﺑﻤﺎ ﻗﻀﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ .
ﻭﺍﻟﺜﺎﻟﺚ : ﺃﻥ ﻳﺴﻠﻢ ﺗﺴﻠﻴﻤﺎً، ﻭﻳﻨﻘﺎﺩ ﺍﻧﻘﻴﺎﺩﺍً ﺗﺎﻣﺎً . ﻓﺒﻬﺬﻩ ﺍﻟﺸﺮﻭﻁ ﺍﻟﺜﻼﺛﺔ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﺆﻣﻨﺎً، ﻭﺇﻥ ﻟﻢ ﺗﺘﻢ ﻓﺈﻧﻪ ﺇﻣﺎ ﺧﺎﻟﻲ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﻣﻄﻠﻘﺎً، ﻭﺇﻣﺎ ﻧﺎﻗﺺ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ، ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﻮﻓﻖ .
.
গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে, মানুষের জন্য তিনটি শর্ত বাদে ঈমান আনা সম্ভব নয়।
প্রথম: নবি সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিচারক হিসেবে নির্ধারণ করা।
দ্বিতীয়: তার বুকে নবি সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা ফয়সালা করেছেন সেই ব্যাপারে কোন সংকোচ ও সংকীর্ণতা অনুভব না করা।
তৃতীয়: পূর্নরূপে আত্মসমর্পন করা এবং সম্পূর্নরূপে আনুগত্য করা।
সুতরাং, এই তিনটি শর্তের মাধ্যমে সে মুমিন হতে পারে। যদি এগুলো পূর্ণ না হয়। তবে, সে হয়ত পরিপূর্ণভাবে ঈমানশূন্য কিংবা তার ঈমান কমতিযুক্ত। আল্লাহই তাওফিক দাতা।
.
[শায়খ ইবন উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ এর "শারহু রিয়াদ্বিস সালিহিন" (২ /২৬০-২৬৩) থেকে অনুবাদ সমাপ্ত।]

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.